ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের হামলায় ৫ ব্যবসায়ী আহত

Date:

Share post:

সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছেন গাউছিয়া মার্কেট ব্যবসায়ীরা। গুরুতর আহত পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। বুধবার রাত ১০টার দিকে মিরপুর রোড হঠাৎ জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে তাদের ওপর রড, ছেনি দিয়ে এলোপাথাড়ি হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলাকারীরা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। হামলায় ২০ থেকে ২২টি দোকানের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। হামলাকারীদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হামলার পর ঘণ্টাখানেক মিরপুর রোড সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

নিউমার্কেট সহ আশপাশের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দোকানের কর্মচারীদের সাথে ঢাকা কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায় তারা ব্যবসায়ীদের হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন গুরুতর আহত হয়। তাদের তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। হামলাকারীদের অধিকাংশই ব্যবসায়ীদের কাছে পরিচিত মুখ বলে অনেকেই জানান।

কলেজের সাত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্যবসায়িদের উপর হামলাকারীরা শরীয়তপুর ও মাদারীপুর ব্লকের ছাত্রলীগ।

ব্যবসায়ীদের দাবি, হামলায় দোকান মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদকের মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। উপস্থিত ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে মার্কেটে এসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, এরপর হামলা চালায়।

ড্রিম ফেয়ার কসমেটিকস দোকানের মালিক কামাল মিয়া (৪৫) জানান, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমার দোকানের কর্মচারী আকাশ গুরুতর আহত হলে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
তিনি আরো বলেন,আমার দোকানে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নিউ শর্মা কিং ফাস্ট ফুডের ম্যানেজার বলেন, ঢাকা কলেজের ছাত্ররা জয় বাংলা স্লোগান হঠাৎ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে উপস্থিত ক্রেতারা আতঙ্কিত হয়ে দৌড়ে আত্মরক্ষা করে। আমার দোকানের আমিসহ চারজন আহত হয়। এরা হলেন মোঃ শরিফ (২২), শিপলু (৩৫), শিহাব (২৩)। একজনের অবস্থা গুরুতর বিধায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

গাউছিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাবু জানান, ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে আমরা বসেছি। তারা আমাদের ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে বা যারা এ এটার সাথে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

হামলার ঘটনা অস্বীকার করে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্মআহ্বায়ক শুভ্র দেব হালদার বাপ্পি জানায়, এক দোকানি শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত দেয়। এর পর শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়। হামলা এবং লুট করার অভিযোগ মিথ্যা।

রমনা বিভাগের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কোনো সন্ত্রাসীর কাছে পরাজয় বরণ করে না। স্পষ্ট করে বলতে চাই, মানুষের জানমাল রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। যারা হামলা করে আইন নিজের হাতে তুলে নেয় তারা অতীতে কেউ রেহাই পায়নি, এবারও পাবে না। যারাই হামলা চালিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি। তাদের ক্ষয়ক্ষতি দেখেছি। সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করা হবে। যদি কোনো ছাত্র সংগঠন বা কোনো নেতৃত্বর কথা বলে যদি এই বিশঙ্খলা করে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা ব্যবসায়ী সমিতির সাথে আবার বসব।