নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মানব পাচার মামলায় দুই নারীসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন (ট্রাইব্যুনাল) আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মর্জিনা বেগম, জেসমিন বেগম, মো. টিটু ও মো. সাহাবুদ্দিন। তাঁদের মধ্যে জেসমিন বেগম পলাতক। এই মামলায় খালাসপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন জাকির হোসেন, মো. সাগর, আসলাম ও শরীফ মিয়া।
রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রকিব উদ্দিন। তিনি বলেন, মানব পাচার মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত ৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। পাশাপাশি তাঁদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয় বায়েজিদ নামের আট বছরের এক শিশু। পরের বছরের ৯ জানুয়ারি এক নারী নারায়ণগঞ্জের র্যাব-১১–এর কার্যালয়ে গিয়ে বলেন, তাঁর ছেলে বায়েজিদ অপহৃত হয়েছে। অপহরণকারীরা বিভিন্ন সময়ে তাঁর কাছে মুঠোফোনে মুক্তিপণ দাবি করছেন। মুক্তিপণ না দিলে বায়েজিদকে হত্যার হুমকি দেন তাঁরা। পরে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে শিশুটি উদ্ধার করে।
আসাদুজ্জামান বলেন, ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সায়েদাবাদ ও সিদ্ধিরগঞ্জের বাগমারা এলাকা থেকে আটজনকে আটক করে র্যাব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, তিনটি গুলি, দুটি চাকু, একটি চাপাতি, ১ হাজার ২০টি ইয়াবা, অপহৃত শিশুদের অজ্ঞান করার জন্য চেতনানাশক ইনজেকশন, ১৪টি সিরিঞ্জ ও ১৭টি মুঠোফোন সেট উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আটজনকে আসামি করে মানব পাচার আইনে মামলা করেন বায়েজিদের মা ডালিয়া বেগম। ওই বছরের শেষের দিকে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, অপহরণকারীরা বায়েজিদকে অপহরণের কথা স্বীকার করেছেন।