তাইওয়ানের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) ছয় দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানেছে। ভূমিকম্পের পরপরই জাপানের আবহাওয়া সংস্থা তাইওয়ানের নিকটবর্তী ও দূরবর্তী দ্বীপগুলোতে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে।
এ নিয়ে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তৃতীয়বার কেঁপে উঠে দেশটি। এর আগে তাইওয়ানে শনিবার রাতে প্রথমবার কম্পন অনুভূত হয়। আবহাওয়া দফতর জানায়, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ছয় দশমিক চার। রোববার সকালে আবার ছয় দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তাইওয়ান। শেষ কম্পন অনুভূত হয় রোববার দুপুরে, এ সময় কম্পনের মাত্রা ছিল সাত দশমিক দুই।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রোববারের ভূমিকম্পটি তার প্রাথমিক শক্তি সাত দশমিক দুই থেকে ছয় দশমিক ৯ মাত্রায় নামিয়ে এনেছিল। এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি দেশটিতে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৪ মিনিটে টাইতুং থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) উত্তরে ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে।
এনডিটিভি সাংবাদিক উমাশঙ্কর সিং টুইটারে একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ভূমিকম্পের প্রভাবে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটি কাঁপতে শুরু করেছে। ভিডিওটি এরইমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিকমাধ্যমে।
সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (সিএনএ) অনুসারে ইউলি জেলার উপকেন্দ্রের কাছে একটি দ্বিতল আবাসিক ভবন ধসে পড়ে এবং দুইজন আটকা পড়েন। তাদের উদ্ধারে কাজ নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। শনিবার একই এলাকায় ছয় দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রোববারের ভূমিকম্প ছিল অনেক বেশি শক্তিশালী।
৬০০ জনেরও বেশি মানুষ চিক এবং লিউশিশি পাহাড়ি এলাকায় অবরুদ্ধ রাস্তার কারণে আটকা পড়েছিলেন, যদিও সেখানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক কেন্দ্র জানিয়েছে, ফুজিয়ান, গুয়াংডং, জিয়াংসু এবং সাংহাইসহ উপকূলীয় এলাকায় কম্পন স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়েছে।
তাইওয়ান নিয়মিত ভূমিকম্পের শিকার হয় কারণ দ্বীপটি দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে অবস্থিত।
দ্বীপটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় “রিং অফ ফায়ার” এ অবস্থিত, তীব্র ভূমিকম্পের এ চাপ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অববাহিকা জুড়ে বিস্তৃত।
তাইওয়ানের সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প ছিল ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে। সে সময় সাত দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে দুই হাজার চারশ’ জনের বেশি মানুষ মারা যায়।