এক মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী হলো নিউজিল্যান্ডের প্রত্যন্ত চ্যাথাম দ্বীপপুঞ্জ। সম্প্রতি এই অঞ্চলে আটকে পড়া পাঁচশ’ পাইলট তিমির মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির সরকার বলছে, খবর পাওয়ার পরও তিমিগুলোকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবারও ওই জলসীমায় হাঙ্গরের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টা বাতিল হয়।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার চ্যাথাম দ্বীপের সৈকতে ২৫০টি পাইলট তিমির মৃত্যু হয় এবং তিন দিন পর পিট দ্বীপে আরও ২৪০টি তিমির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষ এবং তিমি উভয়ের জন্য হাঙ্গর আক্রমণের ঝুঁকির কারণে আমাদের প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল তিমিগুলোর মৃত্যু কষ্ট লাঘবে ‘এনেস্থিসিয়া’ (চেতনানাশক) প্রয়োগ করে। এই দ্বীপগুলো নিউজিল্যান্ডের মূল ভূখন্ড থেকে অনেক দূরে হওয়ায় সেখানে উদ্ধার অভিযান চালানো প্রায় অসম্ভব।
এনেস্থিসিয়া প্রয়োগের বিষয়ে সরকারের সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি উপদেষ্টা ডেভ লুন্ডকুইস্ট বলেন, এই সিদ্ধান্তটি কখনই হালকাভাবে নেওয়া হয়নি। নিরুপায় হয়ে বিকল্প হিসেবে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, সমুদ্র তীরে তিমির মৃতদেহগুলো ফেলে রাখা হয়েছে, যেন সেগুলোতে স্বাভাবিক পচন ধরে এবং তা প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যায়।
চ্যাথাম দ্বীপপুঞ্জে ব্যাপক তিমি আটকে পড়া অস্বাভাবিক নয়। ওই অঞ্চলের সমুদ্র সৈকতে ১৯১৮ সালে আনুমানিক এক হাজার তিমি আটকা পড়েছিল। এছাড়া ২০১৭ সালে সেখানে প্রায় সাতশ’ পাইলট আটকা পড়ে।
কেন তিমিগুলো সমুদ্র তীরে ছুটে এসে আটকা পড়ে বিজ্ঞানীদের কাছে তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে গবেষকরা মনে করেন, তিমির দল খাবারের জন্য ভুল পথে ছুটে এসে তীরে আটকা পড়ে।
পাইলট তিমি ছয় মিটার (২০ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এরা অত্যন্ত মিশুক, এরা দলবেঁধে চলে এবং দলের সাথীদের অনুসরণ করে বিপদে পড়ে যায়।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডে প্রতি বছর প্রায় ৩০০ তিমি সমুদ্র সৈকতে আত্মাহুতি দেয়।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার পশ্চিম উপকূলে আটকে পড়েছিল ২৩০টি পাইলট প্রজাতির তিমি। তাসমানিয়া প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, এর মধ্যে ৩৫টি তিমিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। ওই তিমিগুলোকে গভীর সমুদ্র ছেড়ে দেওয়া হয়।